কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

কালোজিরা ছোট দানা যা গুনাগুনে পরিপূর্ণ।প্রিয় পাঠক আপনি কি কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? আমি আমার এই আর্টিকেলে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
এ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম,কালোজিরা খেলে গ্যাস হয় কিনা, কালোজিরা তেলের উপকারিতা, কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।কালোজিরা সম্পর্কে আই সকল তথ্য জানতে হলে আই পস্ততি আপনাকে সম্পূর্ণ পরতে হবে।

ভূমিকা

কালোজিরার সাথে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত।এটি আকারে ছোট হলেও এর বহু ঔষুধি গুণাগুণ রয়েছে।ইসলাম ধর্মে কালোজিরাকে মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ওষুধ বলা হয়ে হয়ে।আমাদের দেশে কালো জিরা মশলা হিসেবে রান্নার স্বাদ বৃদ্ধিতে ব্যাবহার করা হয় থাকে।

এছাড়াও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা,কবিরাজি চিকিৎসাতেও ব্যাবহৃত হয়।কালোজিরা বীজ থেকে যে তেল পাওয়া যায় তাও অনেক উপকারী।কালোজিরা দেখতে ক্ষুদ্র তবে গুনাগুনে ভরপুর।

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

  • কালোজিরা সকালে খালিপেটে মধুর সাথে মিক্স করে খেতে পারেন। কালোজিরা ও মধু দুটি উপাদানের মধ্যেই অনেক ঔষুধি গুণাগুণ রয়েছে আর দুটি মিক্স করে খেলে এর উপকারিতা বহুগুণ বেরে যায়।
  • বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে কালোজিরা ব্যাবহার করা যায়।আবার খাবারে কালোজিরা ফোরণ দিয়ে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করা হয়।
  • কালোজিরার বেটে নিয়ে ভর্তা বানিয়ে ভাতের সাথে খাওয়া যায় এটি যেমন সুস্বাদু তেমন উপকারী।
  • কালোজিরার তেল ঠান্ডা সর্দি,কাশি,শ্লেষ্মা দুর করতে সাহায্য করে থাকে।তাই এই কালোজিরার বীজ থেকে তের বের করে সেটি সেবন করা যেতে পারে।
  • এছাড়াও কালোজিরা সালাদ, স্যুপের সাথে মিক্স করে অথবা পানির সাথে বা শুধু চিবিয়ে ও খাওয়া যায় এতেও অনেক উপকার।
  • দেহের মেদ কমতে কালোজিরা সহায্য করে থাকে।প্রতিদিন টক দইয়ের সাথে কালোজিরা বেটে মিক্স করে নিয়মিত খেলে দেহের মেদ অনেকটাই কমে আসবে।
  • বাতের ব্যথা নিরাময়ের জন্য কাঁচা হলুদের রস এর সাথে কালোজিরা তেল ও মধু মিক্স করে খেতে পারেন।

কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়

অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খেলে গ্যাস হতে পারে বা যাদের আগে থেকে অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা আছে তাদের কালোজিরা খাওয়ার ফলে গ্যাস হতে পারে। সাধারণত কালোজিরা গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে কিন্তু একদিনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যদি কেউ কালোজিরা গ্রহণ করে থাকে তবে সেক্ষেত্রে বদহজম হতে পারে।

তবে সবার ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দেয় না কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কালোজিরা খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়।

কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

  • কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। কালোজিরাতে বিদ্যমান উপাদান সমূহ শরীরের জীবাণু সাথে লড়াই করে ফলে সহজে কোন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না।
  • ঠান্ডা লাগা,জ্বর,সর্দি,কাশি, বুকে কফ জমে যাওয়া এবং স্লেশা তরল করতেও কালোজিরা ভূমিকা পালন করে থাকে। শ্রেষ্ঠ ইচ্ছা তরল করতে কালোজিরার ভাব নিতে পারেন।
  • ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
  • দেহের রক্ত চলাচল করতে সহায়তা করে থাকে।
  • কালোজিরা ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখে।
  • শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশের সহায়তা করে।
  • কালোজিরার হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • কালোজিরা মাথা ব্যথা বাতের ব্যথা গা হাত পা ব্যথা দূর এবং অনিদ্রা দূর করতে সহায়তা করে।
  • কালোজিরা দেহের অবসন্নতা অলসতা দূর করে এবং দেহের শক্তি যোগায়।
  • ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে, তোকে উজ্জ্বল ও কোমল করতে সহায়তা করে।
  • চুল পড়ার সমস্যা সমাধান করতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
  • দাঁতে ব্যথা দূর করতে মুখের বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়তা করে সে ক্ষেত্রে গরম পানির সাথে কালোজিরা মিক্স করে কুলকুলচা করা যায়।
  • কৃমি দূর করতেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
  • পাইলসের সমস্যা নিরামক হিসেবেও কালোজিরা বিশেষ কাজ করে থাকে।
কালোজিরার অপকারিতার চেয়ে উপকারিতায় বেশি তবুওই সামান্য কিছু ক্ষতিকর দিক লক্ষ্য করা যায় চলুন সেগুলো দেখে নিইঃ
  • যাদের কালোজিরাতে এলার্জি আছে তাদের কালোজিরা গ্রহণের ফলে চুলকানি হতে পারে।
  • দিনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কালোজিরা গ্রহণের ফলে বদহজম দেখা দিতে পারে।
  • বিশেষ কিছু ঔষধ সেবনের কারণে ডাক্তাররা কালোজিরা খেতে নিষেধ করেন।
  • এছাড়া অন্য কোন অপকারিতা নেই।

কালোজিরা তেলের উপকারিতা

কালোজিরা বীজের মত কালোজিরার তেলও উপকারী।
  • কালোজিরার তেল ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখতে ত্বক কে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে।
  • চুলের যত্নেও কালোজিরার তেল বেশ উপকারী।চুল ঘন সিল্কি করতে নতুন চুল গজাতে চুল পড়া কমাতে চুলের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • যেকোনো ধরনের ঠান্ডা সর্দি কাশি দূর করতেও কালোজিরা তেল সেবন করা যায়।
  • বাতের ব্যথা দূর করতে কালোজিরার তেল মালিশ বেশ উপকারী।
  • শীতে মশ্চারাইজার হিসেবে কারো কালোজিরার তেল শরীরে ব্যবহার করা যেতে পারে
  • কালোজিরার তেল শরীরকে গরম রাখতে সহায়তা করে তাই শীতের দিনে কালোজিরার তেল নিয়মিত খেতে পারেন।
  • কালোজিরার তেল অতিরিক্ত মেদ কমাতে এবং কোলেস্টেরলরেবল ঠিক রাখতে সহায়তা করে
  • ডায়াবেটিকস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস

কালোজিরা সম্পর্কের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হাদিস বর্ণনা করেছেন নিচে কিছু হাদিস তুলে ধরা হলোঃ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ তিনি প্রতিদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে কালোজিরা সাম ব্যতীত সকল রোগের নিরাময়। ইবনে শিহাব বলেছেন আর সাম অর্থ হল মৃত্যু এবং কালোজিরা কে সুনিজ ও বলা হয়। (বুখারী হাদিস ৫৬৮৮)

অন্য এক হাদীসে এসেছেঃ খালিদ ইবনে বিন সাদ রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমরা যুদ্ধের অভিযানে বের হলাম আমাদের সঙ্গে ছিল গালিব ইবনে আবজার তিনি পথে অসুস্থ হয়ে গেলেন এরপর আমরা মদিনায় ফিরলাম তখন তিনি অসুস্থ ছিলেন তার দেখাশুনা করতে তিনি আমাদের বললেন তোমরা এ কালোজিরার সাথে রেখো এ থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে ফেলবে তারপর তার মধ্যে জয়তুনের কয়েক ফোঁটা তেল ঢেলে ওদিক ছিদ্র দিয়ে তিনি বললেন মৃত্যু (বুখারী হাদিস নং ৫৬৮৮)

মন্তব্য

আমি মনে করি কালো জিরার অপকারিতা চেয়ে উপকারিতাই বেশি। কালোজিরা প্রতিদিন খাওয়ার মাধ্যমে আমরা ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি। প্রিয় পাঠক আমার এই পোস্টটি যদি আপনার পছন্দ হয়ে থাকে এবং কোন উপকারে এসে থাকে তবে আপনি আপনার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url