চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
চুল নারীর সৌন্দর্য বর্ধন করে। লম্বা ঘন স্বাস্থ্য উজ্জ্বল চুল সকলেই চাই। যে চুল যত যত্ন পাবে সেই চুল তত সুন্দর হয়ে উঠবে। প্রিয় পাঠক আপনি কি চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে খুঁজছেন?
তবে এই পোস্টটি আপনার জন্যই।এই পোস্টে চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায়,চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সহ চুল সম্পর্কিত আরও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এই পোস্টটির মাধ্যমে চুল সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ভূমিকা
ঘন কালো মজবুত চুল সকলেই চাই। সুন্দর চুল পেতে অবশ্যই যত্নের প্রয়োজন আমরা যেভাবে ত্বকের যত্ন নেই সেভাবে চুলের যত্ন নেয়া হয়ে ওঠেনা। কোকরা হোক কিংবা স্ট্রেট চুল সব ধরনের চুলেই যত্নের প্রয়োজন রয়েছে।
যত্নের মাধ্যমে যেমন ড্যামেজ চুল কে সুন্দর করে তোলা সম্ভব তেমনি যত্ন না নিলে সুন্দর চুল ও ড্যামেজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।কিছু মানুষের চুল জন্মগত সুন্দর হয়। আবার কিছু মানুষ যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে তার চুলকে সুন্দর করে তোলে।
চুল ছোট মাঝারি কিংবা লম্বা যেমনই হোক না কেন সব ধরনের চুলেই যত্নের প্রয়োজন।প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে চুলের ধরন ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই বিভিন্ন দেশের মানুষের চুলের ধরনের ও রঙের ভিন্নতা দেখা যায়।চুলের ধরন যেমনই হোক না কেনো সকলেই চাই তার চুল সুন্দর দেখাতে।
চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই মা দাদী দের কাছে থেকে শুনেছি।তারা তাদের চুলের যত্নে বিভিন্ন ঘরোয়া উপাদান ব্যাবহার করতেন। ঘরোয়া উপাদানে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তাই আমরা নিশ্চিন্তে চুলের যত্নে এটি ব্যবহার করতে পারি।
রুক্ষ চুল মসৃণ করার উপায়
ত্বকের মত চুলও রুক্ষ বা তৈলাক্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে। তবে তৈলাক্ত ত্বকে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন না হলেও রুক্ষ চুলের জন্য বাড়তি যত্নের প্রয়োজন রয়েছে। রুক্ষ চুল বলতে আমরা সে সকল চুলকে বুঝে থাকি যে সকল চুল তাদের ন্যাচারাল তেল হারিয়ে ফেলে।
রুক্ষ চুল তার ন্যাচারাল তেল হারিয়ে ফেলার ফলে খুব সহজেই ভেঙে পড়ে চুল পড়া বেড়ে যায় এবং আরো বিভিন্ন চুলের সমস্যা দেখা দেয়।চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় বেবহার করে করা সম্ভব। সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের কারণে বা চুলের যত্নে বিভিন্ন ভুলের কারণে আমরা এই রুক্ষ চুলের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি।
রুক্ষ চুল মসৃণ করতে করণীয়
রুক্ষ চুল মসৃণ করতে চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেলের প্রয়োজন হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল ব্যবহার করতে হবে। আমন্ড অয়েল,অলিভ অয়েল,নারিকেল তেল যে কোন তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন হট অয়েল মাসাজ করতে হবে। সপ্তাহে দুইবার অন্তত মাথায় হট অয়েল মেসেজ করতে হবে।
হট অয়েল ম্যাসাজ এর মাধ্যমে মাথায় রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে ফলে নতুন চুল গজাতে এবং চুল পরা বন্ধ করতে চুলের গুড়া মজবুত করতে সাহায্য করে।চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় এর মাধ্যমে চুলের রুক্ষতা দূর করা সম্ভব।চুলে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
চুলে মশ্চারাইজার যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। চুলের আগা প্রতি বছরে দুই বার অন্তর ছেটে দিতে হবে। রোদে বেশিক্ষণ বাহিরে থাকলে অবশ্যই মাথা স্কার্ফ বা ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যেন সরাসরি সূর্যের রোশনী চুলে না পড়ে। ভেজা চুলে ঘুমিয়ে যাওয়া যাবেনা।চুলে অতিরিক্ত পরিমাণে হেয়ার ড্রায়ার স্ট্রিটনার হেয়ার কালার ব্যবহার করা যাবেনা।এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে।
রুক্ষ চুলের হেয়ার প্যাক
ডিম ও মেথি:তিন থেকে চার টেবিল চামুচ মেথি সারা রাত পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে সকালে সে মেথি বেটে নিয়ে তার সাথে একটি ডিম,দুই চামুচ অ্যালোভেরা জেল মিক্স করে চুলে দিয়ে ১৫ মিনিট রেখে পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এটি চুল মসৃণ করতে সাহায্য করবে।
নারিকেল তেল ও কলা: কলা এবং নারিকেল তেল দুটি উপকরণ চুলের ন্যাচারাল তেল ধরে রাখতে সহায়তা করে। একটি বাটিতে অতিরিক্ত পাকা কলা নিন এরপর এতে তিন টেবিল চামচ নারিকেল তেল নিন এবং এক টেবিল চামচ মধু মিক্স করুন তারপর পুরো চুলে আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগান এবং ১০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা জেলে ও অলিভ অয়েল: অ্যালোভেরা জেল ও অলিভ অয়েল দুটি চুলের যত্নে খুব উপকারী। গাছে থেকে ফ্রেশ এলোভেরা পাতা সংগ্রহ করুন এবং সাইডের কাটা কেটে ফেলে ভিতরের জেল বের করে নিন তারপর সেটা ব্লেন্ডার এ ব্লেন্ড করে তার সাথে পরিমিত পরিমাণে অলিভ অয়েল যোগ করুন এবং মাথার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত মাসাজ করে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।
চুল ঘন করার প্যাক
সকলেই চাই তার চুলকে ঘন রাখতে। চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে চুলকে ঘন করা সম্ভব। চুল ঘন করতে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্যাক ব্যবহার করতে পারি।
- চুলকে ঘন করতে জবা ফুল,মেহেদি পাতা,অ্যালোভেরা পাতা একটি মাঝারি সাইজের পিঁয়াজ এবং ডিম একসাথে ব্লেন্ড করে চুলে মেখে ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। চুলের আকার অনুযায়ী উপকরণগুলো নিতে হবে।
- চার থেকে পাঁচ টেবিল চামচ মেথির সারারাত ভিজিয়ে রেখে সেই পানি ফেলে দিয়ে নতুন পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিয়ে তার সাথে একটি ডিম চার থেকে পাঁচ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল ২ টেবিল চামচ দুধ মিক্স করে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত মেখে ১৫/২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। চুলের আকার অনুযায়ী পরিমাণ বাড়িয়ে কমিয়ে নিবেন।
- মেহেদি পাতার চুল ঘন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চুলের পরিমাণ অনুযায়ী মেহেদী পাতা বেটে নিয়ে তার সাথে টক দই ও ডিম মিক্স করে মাথার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত মেখে নিয়ে দশ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ফেলবেন। তবে যাদের চুলে রং করা আছে অথবা যাদের চুল রুক্ষ তারা মেহেদী এড়িয়ে চলবেন।
চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায়
চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায়ের সাথে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত।ঘরোয়া উপায়ে চুলে যত্ন নেয়া হয় সম্পূর্ণ প্রাকিতিক উপাদান দিয়ে যেগুলো আমরা খুব সহজেই আমাদের হাতের কাছে পেয়ে যায়।মেথি,অ্যালোভেরা,পাকা কলা,কালোজিরা,মধু,টক দই,ডিম,শিকাকাই,আমলা,জবা ফুল,ভৃঙ্গরাজ, বিভিন্ন ধরনের তেল।
এই সকল উপাদানই চুলের যত্ন নেয়ার ঘরোয়া উপায় হিসেবে কাজে আসে।চুলের যত্ন প্রতিদিন নেয়া উচিত।চুলের যত্নে বেশি দিন একই শ্যাম্পু বা তেল বেশি দিন ব্যবহার না করে দুই মাস পর পর শ্যাম্পু ও তেলের পরিবর্তন করা।অলিভ অয়েল চুলের জন্য উপকারী তাই মাঝে মাঝে অলিভ ওয়েল চুলে ব্যাবহার করতে হবে।আবার দুই তিনটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে তেল বের করে নারিকেল তেলের সাথে মিক্স করে লাগাতে পারেন।
আবার তিসি তেলও চুলের যত্নে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আপনি চাইলে নারিকেল তেলের সাথে সামান্য তিশির তেল যোগ করে ব্যবহার করতে পারেন। আবার বিভিন্ন প্যাকের সাথে যোগ করে মাথায় ব্যবহার করতে পারেন।
তেল দিয়ে বেশিদিন মাথায় রাখা যাবে না এতে মাথার ত্বকে ময়লা জমে খুশকি সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।সেই জন্য রাত্রে বেলাতে তেল দিয়ে সারারাত রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে অথবা শ্যাম্পু করার এক ঘন্টা আগে তেল দিতে হবে।
শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় হিসেবে আপনি বিভিন্ন প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন।চুলের যত্নে প্রোটিন প্যাক হিসেবে দুটি ডিমের কুসুম নিয়ে নিতে হবে এরপর সেখানে পাঁচ থেকে ছয় টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল নিয়ে দুই টেবিল চামচ টক দই নিয়ে ভালো করে ফেটে নিয়ে পুরো চুল আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে ২০মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মেহেদী পাতা চুলের যত্নে খুব উপকারী চুলের গোড়া মজবুত করতেও মেহেদী পাতা সাহায্য করে, চুলকে ন্যাচারাল ভাবে কালার করে। চুলের প্রয়োজন অনুযায়ী মেহেদী পাতা নিয়ে তাতে তাদের দুই তিনটি জবা ফুল নিয়ে একসাথে বেটে নিতে হবে তার সাথে দুই তিন টেবিল চামচ টক দই মিক্স করে পুরো মাথার গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
যাদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা আছে তারা মেহেদি পাতা ব্যবহারের ফলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে তারা মাথায় প্যাকটি আরেকটু কম সময় রাখবেন।চুলের যত্নে পাকা কলা অনেক উপকারি যে সকল কলা একদম পেকে যায় সেগুলো আমরা সাধারণত ফেলে দিই কিন্তু সেগুলো ফেলে না দিয়ে চটকে অ্যালোভেরা জেলের সাথে বা সামান্য নারিকেল তেলের সাথে মিক্স করে পুরো চুলে ব্যবহার করলে চুল উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন রাতে অবশ্যই ঘুমানোর সময় চুল ভালোভাবে বেঁধে শুতে হবে যেন বালিশের সাথে ঘষা লেগে চুলের আগা ফেটে না যায়। চুলের জন্য শুধু বাহ্যিক যত্নই প্রয়োজন এমনটি নয় চুল যদি ভিতর থেকে পুষ্টি না পাই তবে আপনার চুল এমনি খারাপ হয়ে যাবে।
সেজন্য চুলের যত্নে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।যেমন মাংস,দুধ জাতীয় খাদ্য,ডিম, জাম, পালং শাক, তৈলাক্ত মাছ,ওটস, শসা, টমেটো, শাকসবজি চুলের যত্নে পর্যাপ্ত পানি খাওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে।
চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা
চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে পেঁয়াজ। চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারী তা বলে শেষ করার মতো না। পেঁয়াজ নিয়ে পেঁয়াজকে খোসা ছাড়িয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে এতে চার টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস এবং তিন টেবিল চামচ এলোভেরা জেল মিক্স করে পুরো মাথায় মেসেজ করে দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
আবার সরাসরি পেঁয়াজের রস মাথায় ব্যবহার করা যায়। সেই ক্ষেত্রে পেঁয়াজ থেকে রস বের করে তা মাথায় সরাসরি লাগিয়ে ১০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাক দুটি নতুন চুল গজাতে এবং চুল ঘন করতে সাহায্য করবে।
পেঁয়াজের রসের সাথে নারিকেল তেল মিক্স করে চুলে লাগানো যেতে পারে তবে তা লাগানোর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।আপনার মাথায় খুশকির সমস্যা থাকলে নারিকেল তেলের সাথে পেঁয়াজের রস মিক্স করে এর সাথে আপনি সামান্য কয়েক ফোটা ট্রিটি অয়েল যোগ করেও মাথায় দিতে পারে।
এক্ষেত্রে অলিভ অয়েল এর সাথে পেঁয়াজের রস মিক্স করেও চুলে লাগাতে পারেন। রুক্ষ চুলের যত্নেও পেঁয়াজের রস খুব উপকারী। সে ক্ষেত্রে দুই কাপ পানির সাথে পেঁয়াজ নিয়ে ভালোমতো ফুটিয়ে নিয়ে তা ঠান্ডা করে মাথায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন চুল উজ্জ্বল হবে।
পেঁয়াজের তেল বানিয়ে চুলে ব্যবহার করা যেতে পারে সে ক্ষেত্রে চুলায় নারিকেল তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজের রস দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে পেঁয়াজের তেল।তবে এটি বেশিক্ষণ চুলায় না ফুটানোই ভালো সে ক্ষেত্রে নারিকেল তেলের গুনাগুন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রোটিন হিসেবে ডিমের সাথে পেঁয়াজের রস মিক্স করেও মাথায় লাগাতে পারেন।
চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে ঘরোয়া পদ্ধতি সবচেয়ে ফলদায়ক পদ্ধতি। তবে যাদের হরমোনাল সমস্যা আছে বা বংশগতভাবে চুল পড়ার সমস্যা আছে কিংবা যারা অতিরিক্ত টেনশন করেন তাদের চুল পড়ার বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় গুলো কাজ করবে না সে ক্ষেত্রে তাদেরকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। প্রতিদিন ১০০ টার মতো চুল পড়াকে স্বাভাবিক ধরা হয়।
আমরা ইতিমধ্যে চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ও বর্ণনা করেছি।সেগুলো ছাড়াও আরো কিছু উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ করা যায়।চুল পড়ার সমস্যার জন্য কদুর তেল অনেক উপকারী।তাই নারিকেলের তেলের পাশাপাশি কদুর তেলও ব্যাবহার করতে পারেন।
এছাড়া নারিকেলের তেলের সাথে অলিভ অয়েল ও ক্যাস্টর অয়েল মিক্স করে ব্যাবহার করতে পারেন সপ্তাহে দুই দিন।মনে রাখতে হবে ক্যাস্টর অয়েল সরাসরি চুলে ব্যাবহার করা যাবেনা।কালোজিরার তেল চুলে পড়া রোধ করতে সাহায্য করে সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন নারিকেলের তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পারেন।চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজের রস সরাসরি চুলের ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন।
আপনি চুলের ঘনত্ব ও লম্বা অনুযায়ী কালোজিরা ও মেথি ব্ল্যান্ড করে নিতে পারেন এই কালোজিরা ও মিথি গুরার সাথে পরিমাণ মতো অলিভ অয়েল মিক্স করে তার সাথে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মিক্স করে একটি পেস্ট বানিয়ে নিন এবং চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এরপর ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
হেয়ার টোনার হিসেবে সারারাত মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই মেথির পানি সকালে ছেঁকে নিয়ে মাথার স্কেলপে স্প্রে বোতলের সাহায্যে ব্যবহার করতে পারেন।এটি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। মেথি চুলায় দিয়ে তার সাথে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে জাল দিতে হবে যখন একটি জেলের মত বের হবে তখন নামিয়ে ফেলতে হবে এবং সাথে সাথে ছেকে নিতে হবে এটি শ্যাম্পু করার পর পুরো চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের যত্নে চাল ধোঁয়া পানিও খুব কার্যকরী আপনারা চাইলে ভাতের মাড় ও ব্যবহার করতে পারেন তবে চাল ধোয়া পানি বলতে চাল সাত থেকে আট ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর যে পানিটি বের হবে সেই পানির সাথে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিক্স করে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন এটি খুব কার্যকারী একটি পদ্ধতি এটি চুল লম্বা করতে ঘন করতে সাহায্য করে।
চুলের যত্নে অ্যালোভেরার ব্যবহার
চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় হিসেবে এলোভেরার জুরি মেলা ভার।অ্যালোভেরা চুলকে লম্বা করতে সাহায্য করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে ন্যাচারাল কন্ডিশনার যা চুলের ন্যাচারাল তেল ধরে রাখতে সাহায্য করে।অ্যালোভেরা জেল নিয়ে এটি সরাসরি চুলে ব্যবহার করা যায় আবার এর সাথে অন্যান্য উপাদান মিক্স করেও ব্যবহার করা যায়।
অ্যালোভেরা জেল আপনি চাইলে প্রতিদিন আপনার চুলে ব্যবহার করতে পারেন। চুলের আগা ফাটা রোধ করতে এক কাপ এলোভেরা জেল এর সাথে অলিভ অয়েল এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিক্স করে চুলে লাগান এতে চুলের আগা ফাটা বন্ধ হবে।
একটি পাত্রের ডিমের সাদা অংশ নিয়ে এক টেবিল চামচ এলোভেরা জেল এবং এক টেবিল চামচ দই মেশিনে এবং এটি পুরা চুলে ব্যবহার করুন এবং ৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এটি চুল ভেঙে যাওয়ার সমস্যার সমাধান করবে।অ্যালোভেরা জেলের সাথে সমপরিমাণ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার নিয়েও ব্যবহার করতে পারেন এটি চুলের আগায় ব্যবহার করবেন।
তবে যাদের এলোভেরার এলার্জি আছে তারা অ্যালোভেরা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। অ্যালোভেরা জেলের সাথে পেঁয়াজের রস নিয়ে তুলা বল করে ভিজিয়ে মাথার স্ক্যাল্পে ব্যবহার করতে পারেন।এছাড়াও এলোভেরা জেল এর সাথে তিসির জেল মিক্স করে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন এটি চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখবে চুলকে দিবে বাড়তি সৌন্দর্য।
এছাড়া নারিকেল তেল চুলায় দিয়ে তার সাথে টুকরো টুকরো করে অ্যালোভেরা কেটে কিছুক্ষণ গরম করে নামিয়ে ফেলুন এভাবে এলোভেরা তেল বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
মন্তব্য
চুলের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া উপায় গুলো খুব কার্যকরী সমাধান বয়ে আনতে পারে। প্রিয় পাঠক আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের উপকারে আসে তবে অবশ্যই আপনি আপনার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন।ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url