টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

 বর্তমানে ক্যাপসিকাম অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের কৃষকেরা দেশের মাটিতে ক্যাপসিকাম চাষ করতে সক্ষম হচ্ছে এবং তা বিক্রয় করে বেশ লাভবান হচ্ছে। তবে এ ক্যাপসিকাম টবে ও চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। 

প্রিয় পাঠক আপনি কি টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে? তবে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন। এ পোস্টটিতে আমি টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে এবং ক্যাপসিকাম গাছের যত্ন কিভাবে নিতে হয় এবং ক্যাপসিকাম বিষয়ক সকল তথ্য আলোচনা করেছি।

ভূমিকা

ক্যাপসিকাম বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটিকে গোলাকার দেখতে পাওয়া যায়। এটি যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ। এই ফলটি মরিচ জাতের অন্তর্ভুক্ত হলেও এটি মরিচের ন্যায় ঝাল না এটি মিষ্টি মরিচ।বর্তমানে বাংলাদেশের চাষীরা ও ক্যাপসিকাম চাষ করছে এবং লাভবান হচ্ছে। 

ক্যাপসিকাম চাষ করা যেমন লাভজনক তেমন ঝুঁকিপূর্ণ। ক্যাপসিকাম গাছের যত্ন সঠিকভাবে না নিলে গাছ বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হবে এবং আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না।এই গাছের সঠিক যত্ন ও পরিচর্যার মাধ্যমে মাধ্যমে খুব সহজেই লাভবান হওয়া সম্ভব।

বর্তমানে বাসা বাড়ির আঙ্গিনাই বা ছাদে টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে অনেকে ক্যাপসিকাম চাষ করছেন এবং আসানুরুপ ফল পাচ্ছেন। ক্যাপসিকাম সাধারণত লাল হলুদ সবুজ এই তিন রঙের হতে দেখা যায়।

ক্যাপসিকাম বীজ থেকে চারা উৎপাদন

  • ক্যাপসিকাম বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা খুবই সহজ একটি পদ্ধতি। ক্যাপসিকাম এর বীজ বাজার থেকে কিনে এনে অথবা ক্যাপসিকাম থেকে তার বীজ সংগ্রহ করে করে একটি টবে কোকো বিট নিয়ে তাতে বীজগুলো ছড়িয়ে দিতে হবে তারপর বীজ গুলোর উপর সামান্য পরিমাণ কোকো বিট ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর এর ওপর পানির স্প্রে করতে হবে এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। প্রতিদিন এতে পানির স্প্রে করতে হবে এর ফলে ১০ দিনের মধ্যেই ছোট ছোট চারা দেখা যাবে।
  • বীজ সংগ্রহ করার পর একটি পাত্রে পানি নিয়ে বীজগুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে একদিন তারপর বীজগুলো পানি থেকে তুলে নিয়ে ভিজা অবস্থায় একটি সুতি কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে একদিন। একদিন পর দেখা বীজ থেকে ছোট ছোট অংকুর বের হয়েছে এগুলো মাটিতে লাগিয়ে দিলে এবং পানি স্প্রে করলে কিছুদিনের মধ্যে চারা গাছের রূপান্তরিত হবে।

ক্যাপসিকাম চাষের সময়

অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস ক্যাপসিকামের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় বপনের। বাংলা মাস ভাদ্র ও মাঘ মাস এই ক্যাপসিকাম বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। বর্তমানে বারো মাসে এই ফলটি চাষ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি

টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতির প্রথমেই টব বাছাই করতে হবে আর টব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই ছিদ্রযুক্ত টব নিতে হবে যেন অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকে। তবে সাধারণ মাটির সাথে এক তৃতীয়াংশ গোবর সার মেশাতে হবে।ক্যাপসিকাম সাধারণত বেলে দোআশ মাটিতে ভালো হয়।

তাতে চারা লাগিয়ে দিতে হবে এবং এমন স্থানে রাখতে হবে যেখানে রোজ ছায়া বাতাস সবই থাকে।চারা রোপনের ২০ দিন পর ইউরিয়া সার এক চামচের মতো প্রয়োগ করতে হবে।চারা গাছে নিয়মিত পানি দিতে হবে। বড় হলে একটি শক্ত খুটি দিতে হবে যেন ভেঙে না যায়।


প্রতিদিন যত্ন নিতে হবে।আপনি চাইলে নিজেও উপযুক্ত মাটি তৈরি করে নিতে পারেন সে ক্ষেত্রে ৫০% সাধারণ মাটি, ২৫% কম্পোস্ট সার এবং ২৫ পার্সেন্ট বালি। বালি পানি নিষ্কাশনে সহযোগিতা করবে। তারপর টব নিয়ে সেই টবে সামান্য মাটি দিয়ে তাতে তরকারির খোসা দিয়ে তার ওপর তৈরিকৃত সকল মাটি দিয়ে দিতে হবে তারপর চারা গাছ লাগিয়ে দিতে হবে।টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি ক্যাপসিকাম চাষের জন্য খুবই সহজ একটি পদ্ধতি।            

ক্যাপসিকাম গাছের যত্ন

  • প্রতিদিন গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিতে হবে
  • নিয়মিত গাছের আশেপাশে জন্মে থাকা আগাছা পরিষ্কার করতে হবে
  • গাছে পিঁপড়ে বা পোকামাকড় দেখা দিলে গাছে বিষ স্প্রে করতে হবে।
  • গাছে কোন রোগ দেখা দিলে সেই রোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
  • গাছের প্রয়োজন মত সার দিতে হবে
  • গাছে যেন পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক থাকে এবং গাছ যেন তীব্র রোদে না থাকে বা একদম ছায়াতেও না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে

ক্যাপসিকাম গাছের রোগ

ক্যাপসিকাম গাছ একটি রোগ সবসময় দেখতে পাওয়া যায় সেটা হচ্ছে পাতা কুঁকড়ে যাওয়ার রোগ। খুব সহজেই ক্যাপসিকাম গাছ এ রোগে আক্রান্ত। বিভিন্ন ধরনের সার প্রয়োগ এবং বিভিন্ন ধরনের বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে এই রোগের সমাধান পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন 

কখনো কখনো এই রোগের কোন সমাধান মিলে না গাছ সম্পূর্ণ মরে যায়। তবে এ রোগ একটি গাছ থেকে যেন অন্য কোন গাছে রোগ সংক্রামিত না হয় সেজন্য এই গাছটিকে পুড়িয়ে ফেলা উত্তম।

FAQ 

১.ক্যাপসিকাম এর কাজ কি?
ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমানে ভিতামিন সি রয়েছে যা শরীরের ভিটামিন সি এর ঘাটতি পুরন করে এবং ভিটামিন সি জাতিও রোগ প্রতিরোধ করে।

২.ক্যাপসিকাম এর বাংলা নাম কি?
ক্যাপসিকাম এর বাংলা নাম ক্যাপসিকাম এর বাংলা নাম বেলপেপার মিষ্টি মরিচ শিমলা মরিচ।

৩.ক্যাপসিকাম কি সবজি?
হ্যাঁ ক্যাপসিকাম এক ধরনের সবজি।

৪.ক্যাপসিকাম চাষ করতে কতদিন লাগে
ক্যাপসিকাম চাষ করতে সাধারণত ছাড়া রোপনের পর তিন মাস পর্যন্ত সময় নেয়।

মন্তব্য

আমার এই পোষ্টটিতে আমি ক্যাপসিকাম গাছের বিভিন্ন অজানা তথ্য সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। টবে ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি এর মাধ্যমে অল্প জায়গাতে ক্যাপসিকাম চাষ করা সম্ভব।আশা করি এ পোস্টটি পড়ে আপনারা সকলে উপকৃত হবেন। এই পোস্ট পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আপনাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url