ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন

ডেঙ্গু ভাইরাস ঘটিত রোগ।ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস এডিস মশা বহন করে থাকে।আগের লক্ষনের থেকে এবার ডেঙ্গুর লক্ষণে ভিন্নতা দেখা দিচ্ছে।আগের লক্ষনের থেকে এবার ডেঙ্গুর লক্ষণে ভিন্নতা দেখা দিচ্ছে।
এডিস মশাও তার চরিত্র বদলে ফেলেছে।ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় জানা উচিত।আপনি কি ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চান?আমার এই পোস্টে আমি ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করেছি।এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পরলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ভূমিকা

এডিস মশার কামড়ের ফলে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে।বর্তমানে বাংলাদেশে এই ডেঙ্গু মহামারীতে রূপ নিচ্ছে।ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেশির ভাগ মানুষই মৃত্যু বরণ করেছে।এই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো খুব জরুরী।

এ সম্পর্কে সচেতন না হলে এর অবস্থার আরো অবনতি হতে পারে।তাই আমাদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়া উচিত।ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানলে এই রোগের মোকাবেলা করা সহজ হবে।

ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে

ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত ৭ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায় তবে এখন এটি ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে দেখা যাচ্ছে। ডেঙ্গু রুগীর জ্বর ১০৪° পর্যন্ত উঠতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ

না ডেঙ্গু কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয় ।ডেঙ্গু রুগীর সেবা করলে বা রুগীর ব্যাবহার করা বা স্পর্শ করা জিনিস পত্র একজন সুস্থ ব্যাক্তি ব্যাবহার করলে এ রোগ হওয়ার সম্ভবনা নেই।আবার এডিস মশা কামড় দিলেই যে ডেঙ্গু হয়ে যাবে এমনটিও নয়।

শুধু মাত্র ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস বহনকারী মশা কামড় দিলে ডেঙ্গু হবে।কোনো মশা যদি একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যাক্তিকে কামড় দিয়ে একজন সুস্থ মানুষকে কামড় দেই তবে সে সুস্থ ব্যাক্তির ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যাক্তিকে সব সময় মশারির মধ্যে রাখতে হবে।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

এডিস মশা তার চরিত্রে পরিবর্তন আনায় ডেঙ্গুর লক্ষণেও ভিন্নতা দেখা দিচ্ছে।আমরা সাধারণত জানি ডেঙ্গু মানেই জ্বর তবে এবার অনেকেরই জ্বর ছাড়াই ডেঙ্গু টেস্টে পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে।ডেঙ্গুর লক্ষণের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষেরই ডায়ারিয়া,শরীরের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ব্যাথা হওয়া,বমি হওয়া,ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়া,হৃদ স্পন্দন বেড়ে যাওয়া,শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে যাওয়া ও র‍্যাশ হতে দেখা যাচ্ছে।

ডেঙ্গু রোগ সাধারণত NS1 টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।ডেঙ্গু পজিটিভ আসলে আতঙ্কিত না হয়ে সাথে সাথে ডক্টরের পরামর্শ নিতে হবে।ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী চললে এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে খুব সহজে ডেঙ্গু থেকে বাঁচা সম্ভব।

এছারাও ডেঙ্গু প্রতিকারে যেসব বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো জ্বর কমানোর জন্য জ্বরের ওপর নির্ভর করে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন করতে পারেন।তবে শরীরের ব্যাথা কমানোর জন্য কোনো প্রকার ব্যাথা নাশক ওষুধ সেবন করা যাবে না।জ্বর উঠে শরীর গরম হয়ে গেলে কপালে জলপট্টি দিতে পারেন অথবা গোসলও করতে পারেন।

রুগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবার যেমন: ডাব এর পানি,স্যালাইন খাওয়াতে হবে।আক্রান্ত রুগীকে অবশ্যই আইরন সম্বৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। রুগীর অবস্থা বুঝে হসপিটালে নিতে হবে।ডেঙ্গুর জ্বর সনাক্ত করতে এবং রোগকে রোধ করতে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।

ডেঙ্গু হলে কি খেতে হয়

  • ডেঙ্গু জ্বরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।পানির পাশাপাশি ডাবের পানি,স্যালাইন,ফলের জুস, স্যুপ খাওয়াতে হবে।ডেঙ্গু রুগীর ডায়ারিয়া ও বমি হওয়ার ফলে শরীর থেকে পানি কমে যেতে থাকে তাই বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে।
  • ভিটামিন সি শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করতে সাহায্য করে তাই বেশি বেশি ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।যেমন:লেবু,কমলা,আমলকী, মাল্টা,জাম্বুরা ইত্যাদি।
  • ডেঙ্গু রোগীর শরীরে প্লাটিলেট কমতে শুরু করে তাই জন্য রক্তে প্লাটিলেট বাড়ায় এমন খাবার খেতে হবে।ভিটামিন কে রক্তের প্লাটিলেট বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।বেশি বেশি ভিটামিন কে সম্বৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।যেমন:ব্রকলি।
  • যেসকল খাবার আইরন রয়েছে সে সকল খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।এক্ষেত্রে ডালিম খাওয়া যেতে পারে এটি শরীরে আইরন পাশাপাশি শরীরে শক্তিও যোগাবে।
  • হলুদ শরীরের মেটাবোলিজম বাড়াতে সাহায্য করে আবার এটিকে অ্যান্টিসেপটিক খাবারও বলা হয়ে থাকে তাই দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।এটি ডেঙ্গু রোগ দ্রুত সারতে সহায়তা করে।এছাড়াও ভিটামিন, পটাশিয়াম, জিংক, কার্বোহাইড্রেট সম্বৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

ডেঙ্গু হলে কি খাবার খাওয়া যাবে না

  • ক্যাফাইন জাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে।
  • অতিরিক্ত মশলা ও তেল জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা।
  • কোমল পানীয় খাওয়া যাবেনা।
  • বিভিন্ন প্রক্রিয়া জাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে করণীয়

যেকোনো রোগ প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ উত্তম।এডিস মশা নিধনে পুকুর, ডোবা,জলাশয় নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।বাসার আসে পাশে ড্রেন পরিষ্কার রাখতে হবে।
এডিস মশা জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে তাই বাসার আসে পাশে কথাও যেনো পানি জমে না থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে।বাসায় আসে পাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকলে তা ফেলে দিতে হবে।
এডিস মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারী,কয়েল,এরোসল ব্যবহার করতে হবে।বাসা থেকে বাহিরে যাওয়ার সময় পুরো ত্বক ধেকে থাকে এমন কাপড় পরে যেতে হবে।বাহিরে যাওয়ার সময় বিভিন্ন মশা নিরোধক ক্রিম ব্যাবহার করতে হবে।

শেষ কথা

পরিশেষে আমি মনে করি প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ উত্তম। সুতরাং ডেঙ্গু সম্পর্কে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে।ডেঙ্গু মোকাবেলায় এর প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ডেঙ্গু অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।আমার পোস্টটি যদি আপনাদের উপকারী মনে হয় তবে পোস্টটি আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সাথে শেয়ার করুন।ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url